Sunday, July 1, 2018

মাদারীপুর কালকিনি৩ নির্বাচনী এলাকার স্বাধীনতাত্তোর কিছু অযাচিত প্রত্যাশার কথাঃ মোকতেল হোসেন মুক্তি

মাদারীপুর কালকিনি৩ নির্বাচনী এলাকার স্বাধীনতাত্তোর কিছু অযাচিত প্রত্যাশার কথাঃ
Moktel Hossain Mukthi
মোকতেল হোসেন মুক্তি

আওয়ামী লীগের নেতা পরিবর্তনে মাদারীপুর কালকিনি৩ আসনের ভোটার ও নিরীহ জনগণের কোন ভূমিকা ছিল না।

বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে প্রশিক্ষনদাতা মহান স্বাধীনতার সফল সংগঠক মরহুম এডভোকেট মতিউর রহমানের পরে এই কালিকিনির রাজনীতি পচে গিয়েছে। এখানে সেই ডামূড্যা থেকে রাজ্জাক ভাইকেও আনা হয়েছিল ৭৩ সালে।

কি দরকার ছিল? কালকিনিতে কি এমন ভালো নেতা ছিল না? ৭৩ সালে তো হাবিবুর রহমান আজাদ দল পরিবর্তন করেনি? কালকিনির ইতিহাসে প্রথম সংসদ সদস্য (১৯৭০ এম সিএ) এডভোকেট মতিউর রহমানের উপর যে অবিচার করা হয়েছিল; বিকল্প হিসেবে কালকিনিবাসী বিশেষ করে সকল মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের নৌকার মানুষগুলোর প্রত্যাশা ছিল হাবিবুর রহমান আজাদকে নোমিনেশন দেয়া হবে। দেখা গেল সেখানে ডামূড্যা শরীয়তপুর থেকে আনা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর রাজ্জাক, আমাদে গুরু রাজ্জাক ভাইকে। যদিও তিনি আমাদেরই নেতা ছিলেন কিন্তু তিনিতো খোদ কালকিনি থানার বাসিন্দা বা ভোটার ছিলেন না।

এডঃ মতিউর রহমান এম পি পরেই চরম অবিচার করা হয় হাবিবুর রহমান আজাদের উপর। মুজিব বাহিনীর ( বি এল এফ) এর তুখোড় ছাত্রনেতা হতাশায় খোভে দুঃখে শেখ শহীদুল ইসলামের সাথে বন্ধুত্বের সূত্রে দল বদল করতে বাধ্য হন। এমন কি হাবিবুর রহমান প্রথমে জাতিরজনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শ সৈনিক ঘোষনা দিয়ে বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত পোষ্টার দিয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচন করতে বাধ্য হয়।

দল এক একজন নিবেদিত ত্যাগি তুখোড় কর্মঠ চৌকস অভিজ্ঞ নেতা/নেত্রীদের যদি মূল্যায়ন না করা হয়; তখন তারা বিদ্রোহ করতে বাধ্য হয়; হাবিবুর রহমান আজাদ তাই করেছিলেন। এবং এর মূল কারনই ছিল আসল তৃনমূল নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন না করে জানা শোনা বা মূখচেনা জনপ্রিয় নেতাদের নোমিনেশন দেয়া। আমরাই রাজ্জাক ভাইকে পাস করিয়েছিলাম ১৯৭৩ সালে। কিন্ত যেখানে রাজ্জাক ভাই ফরিদপুর ডামূড্যার ২টি আসনে নির্বাচন করছেন, সেখানে বঙ্গবন্ধু কার কথায় কার পরামর্শে মাদারীপুর কাপানো , ১৯৭১ এ কোলকাতা কাঁপানো সাংবাদিক নেতা, ৬৯ এর পূর্ব পাকিস্তান কাঁপানো তোফায়েল আহমেদ শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন আ স ম আব্দুর রব আব্দুল কুদ্দুস মাখন নূর ই আলম সিদ্দিকী ও শাহজাহান সিরাজদের মত জাতীয় ছাত্রনেতাদের সাথে বঙ্গবন্ধুর নামে মিথ্যা আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার প্রতিবাদে বিদ্রোহী বাংলাকে যে সকল ছাত্রনেতা সাইক্লোন ও টর্পেডোর মত কাপিয়ে দিয়েছিল; সে হাবিবুর রহমান আজাদ কেন কালকিনি আসনে ১৯৭৩ সালে নোমিনেশন পাবে না?
এ গুলো হাবিবুর রহমান আজাদের মনের কথা বা ক্ষোভ নয়; এ সব তথ্য আমার ব্যক্তিগত মতামত এবং আমার স্বচোখে দেখা বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকেই আমি উল্লেখ করছি। আমি কারো চামচামি করতে রাজি নই; হাবিবুর রহমান আজাদ আমাকে বাসায় নিমন্ত্রণ করে এক বেলা খাওয়ায় নাই যে তাঁর প্রশংসা করবো; যা সত্য তাই বলতে হবে;
মুক্তিযুদ্ধ ও পরবর্তী আওয়ামী লীগের কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভুল সিদ্ধান্ত ও ব্যর্থতার কথা অস্বীকার করার উপায় নেই; সঠিক ইতিহাসকে মিথ্যা দিয়ে ঢেকে রাখা যায়না যেমন ঢেকে রাখা যায়না অগ্নিকে কাপড় বা কম্বল দিয়ে।

মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মরহুম মতিউর রহমান ভাই যখন আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী পরিষদে ঠাই পেলেন না, তিনি বাধ্য হয়ে দলের চেয়ে কো-অপারেটিভ এবং নিজের আইনী ব্যবসার দিকে ঝুকে পড়েছিলেন, তখন হাবিবুর রহমান আজাদকে কেন দেয়া হল না? হাবিবুর রহমান আজাদ কি অযোগ্য ছিল? ৬৯ এর গণ অভ্যন্থানের নায়ক হাবিবুর রহমান আজাদ, কালকিনিবাসীকে রাজনীতি শিখিয়েছিল এই হাবিবুর রহমান আজাদ আর এডঃ মতিউর রহমান, তাদের থেকে কেড়ে নিয়ে ডামূড্যার রাজ্জাক ভাইকে নমিনেশন দেয়া ছিল জাতিরজনকের এক ভূল সিদ্ধান্ত। সে দিন থেকেই শুরু হল ভাড়াটিয়া নেতাদের আবির্ভাব এবং আজো চলছে সে ভাড়াটিয়া নেতার বিচরণ।

কালকিনিকে স্বয়ং নেত্রীও মূল্যায়ন করেন নি। সৈয়দ আবুল হোসেনকে ঠিক খালেদা জিয়ার ফাতেমার মত বিনা অপরাধে জেল বরণ করিয়েছিলেন । কেড়ে নেয়া হল মন্ত্রীত্ব, কেড়ে নেয়া হল সাংসদের পদ এবং সকল মর্যাদা।

সে কালকিনিতে একান্ত নিকটের বলেই আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম কে দেয়া মোটেও সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল না।
নাসিম সাহেব যে কাজটি করেছেন-আওয়ামী লীগকে কালকিনি উপজেলায় আড়িয়াল খাঁ নদীতে চুবিয়ে চুবিয়ে হত্যা করার চেষ্টা করেছেন। একটি সুন্দর স্বচ্ছ রাজনৈতিক দলের ব্যানারে নাসিম সাহেব কালকিনিকে দুই ভাগে ভাগ করে দুটি টুকরো করেছেন। একটি আওয়ামী তৃনমূল আর একটি হাইব্রীড কাউয়া এবং তিনি কাউয়া থেকে কোটি টাকা নিজের পকেটে ঢুকিয়ে আরো অপমান করেছেন আওয়ামী লীগ তথা জননেত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর ইমেজকে।
নাসিম সাহেব মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সহ একান্ত সচিব ছিলেন, সে ক্ষমতার অপব্যবহারে নিজের ও লীগের ভাবমূর্তি তিনি গলাটিপে হত্যা করেছেন।

LikeShow more reactionsComment

Saturday, June 30, 2018

# ভাগ্যের লিখন ও শাসকের ইতিকথা #

আয়োজনে যা থাকবে মাদারীপুর--৩ নির্বাচনী আসনে ১৯৭০ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত শাসকদের পরিচয়,তাদের জন্ম স্থান, তাদের শাসন কাল সহ এদের উন্নয়নের ফিরিস্তি এবং কালের বিবর্তনে চোখে পড়ারমত উন্নয়নের বিবরন তুলে ধরা হবে।অবশেষে কপালের লিখন বলতে তো একটা প্রবাদ প্রবচন। আলহাজ্ব সৈয়দ আবুল হোসেন সমর্থকগোষ্ঠী

# ভাগ্যের লিখন ও শাসকের ইতিকথা #

আজ আমরা স্বাধীন।আমরা পরিপূর্ন স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতেছি।স্বাধীনতার ৪৬ বছর অতিক্রম করে ৪৭ বছরে পর্দাপন করলাম---- যাক এসব প্রসংগ। বিরতির কমা ব্যাবহার করে শুরু করলাম মাদারীপুর--৩ নির্বাচনী এলাকার শাসকদের ইতি কথা নিয়ে আজকের আয়োজন---------

স্বাধীনতার এক বছর পূর্ব হতে মাদারীপুর--৩ আসনের এম,এল,এ, ছিলেন বাশগাড়ী নীবাসী মরহুম এড্যাঃ মতিউর রহমান।কতিথ আছে যে ১৯৭১ পরর্বতী কিছু সময় বঙ্গবন্ধু সরকারের একজন জাতীয় সংসদ ছিলেন।এরপর নির্বাচিত শাসক নিয়োগ হন মরহুম আঃ রাজ্জাক সাহেব।তিনি শরিয়তপুর জেলা নিবাসী। ১৯৭৫ সালের পটপরির্বতনে শাসকের পরির্বতন হয়------ শাসক নির্বাচিত হন মরহুম আঃ মান্নান সিকদার।অবশ্য তিনি একজন প্রতিমন্ত্রী নিয়োগ পেয়েছিলেন। তার শাসনকাল ছিল ১৯৮১ সালের শেষ পর্যন্ত। আগমন ঘটে স্বৈরশাসনের------ ঘটে শাসকের পরির্বন।শাসক নির্বাচিত হন শেখ শহীদুল ইসলাম। প্রমোশন হয় মন্ত্রী পরিষদের সদস্য হিসাবে।তাও আবার শিক্ষা মন্ত্রী হিসাবে।জনাব শেখ শহীদুল ইসলামের জম্নস্থান গোপালগন্জ জেলার টুংগীপাড়া উপজেলায়। তিনি শাসন করেছেন ১৯৯০ সালের ৬ ই ডিসেম্বর পর্যন্ত।

দেশে স্বৈরশাসকের পতনের পর হয় শাসকের পরির্বন---------- শাসক নির্বাচিত হন আলহাজ্জ সৈয়দ আবুল হোসেন।তিনি চার চার বার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।এমনকি দুই বার মন্ম্রী পরিষদের সদস্য ও হয়েছেন।আলহাজ্জ সৈয়দ আবুল হোসেন ছিলেন কালকিনি বাসী।

তারপর ২০১৪ সালের ৫- ই জানুয়ারী নির্বাচনে ঘটে শাসকের পরিবর্তন। আর শাসক নির্বাচিত হন আ,ফ,ম বাহাউদ্দিন( নাসিম সাহেব)। এখন পর্যন্ত বহাল আছেন। তার জন্ম মাদারীপুর জেলা সদরে।

উন্নয়নের ফিরিস্তি-------- এমনিতেই আওয়ামীলীগ ছাড়া অন্য রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে বিমাতাসুলভ আচরন পেতো। তাই কাংখিত উন্নয়ন হতো না। তারপর ও ধারাবাহিক উন্নয়ন বলতে একটা কথা আছে--- তার থেকে ও ছিল অবহেলিত। তাই বলে উন্নয়ন হবে না?

সেই ১৯৯১ সাল থেকে ২০১৪ সালের ৪-ঠা জানুয়ারী ছিল --- GOLDEN STAIRS OF KALKINI UPJELA. অর্থ--- স্বর্নের সোনালী সোপানের কালকিনি উপজেলা। সাবাস!!! শাসক---- আলহাজ্ব সৈয়দ আবুল হোসেন।আপনার শাসন আমল ছিল অহিংস,সুস্থ,কোন্দল মুক্ত রাজনীতির কালচার।তার উন্নয়নের ফিরিস্তি এই অল্প লেখায় শেষ করা যাবে না। তাই অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও শিক্ষায় উন্নয়ন নিয়েই লিখব।

আলহাজ্জ সৈয়দ আবুল হোসেন তার নির্বাচনী এলাকায় নিজ পিতার নামে সহ তার নিজ নামে ৬ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করেছেন।এই প্রতিষ্ঠান গুলো জাতীয় সুনাম অর্জন করেছে।বিশেষ করে এ পর্যন্ত ৯২০ জনছাত্র- ছাত্রী বিভিন্ন ক্যাডারে বি,সি,এস,এ পাশ করে রাষ্টের বিভিন্ন গুরুত্ত পূর্ন পদে অধিষ্টিত রয়েছেন। এটাই গর্ব। আলহাজ্জ সৈয়দ আবুল হোসেন এর উন্নয়ন কর্মে ছিল দেশপ্রেম আর আন্তরিকতা। যা মানুষকে মানবতার পথ দেখায়।

আয়োজনের শেষ প্রান্তে থাকবে " ভাড়াটিয়া" শব্দ ব্যাবহার করে শেষ সমাপ্তি ঘটাবো---------- মাদারীপুর--৩ নির্বাচনী এলাকার জনগন শাসিত হয়েছেন " ভাড়াটিয়া" দ্বারা ২৬ বছর আর কালকিনি নিবাসী আলহাজ্জ আবুল হোসেন কর্তৃক শাসিত হয়েছেন ২০ বছর।আজ কালকিনি বাসীর একটাই প্রশ্ন সেটা হলো------ কেন? আমাদের " ভড়াটিয়া" দের শাসক হিসাবে মেনে নিতে হবে? কালকিনি উপজেলায় একটি পৌরসভা সহ ১৫ টি ইউনিয়ন রয়েছে।একজন উপজেলা চেয়ারম্যান রয়েছেন----- এই জনপ্রতিনিধির মধ্যে বেশ কয়েকজন আছেন যারা একজন জাতীয় সংসদ সদস্য হওয়ার যোগ্যতা রয়েছে।তার পর ও কেন " ভাড়াটিয়া" দ্বারা আমরা শাসিত হব? রাজনীতি দলের কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন যাতে আমাদের যেন আর " ভাড়াটিয়া দ্বারা শাসিত হতে না হয়।

পাঠকদের দৃষ্ঠি আর্কষন-------- "ভাড়াটিয়া" শব্দটা ব্যাবহার করার জন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।(এডমিন)

Friday, June 22, 2018

ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার স্বপ্নঃ

ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার স্বপ্নঃ সৈয়দ আবুল হোসেন 

সারা বাংলাদেশে সৈয়দ আবুল হোসেন এপরিচিত মুখ। শিক্ষা বিস্তারে তাঁর উদার একাগ্রতা সর্বমহলে প্রশংসিত। শিক্ষার মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন সৈয়দ আবুল হোসেনের অনুধ্যায়ী চেতনার উজ্জ্বল প্রকাশ। তৃতীয় বিশ্বে তাঁর মতো উদার লোক খুব কম আছে। বাংলাদেশে অনেক লোক আছে তাঁর চেয়ে অনেক বেশি বিত্তের অধিকারী কিন্তু তাঁর মতো চিত্তের অধিকারী না হলে তো আর নিজের কষ্টার্জিত অর্থ এমন মহান উদারতায় দান করা যায় না। সার্বিক কর্মকান্ড বিবেচনায় আমেরিকার বায়োগ্রাফিক্যাল ইন্সটিটিউট আলহাজ্ব সৈয়দ আবুল হোসেনকে তথা শতবর্ষের শ্রেষ্ঠ মানুষ পদকে ভূষিত করে। শিক্ষা বিস্তারের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি শেরে-বাংলা পদক, জাতীয় পুরস্কার, অতীশ দীপঙ্কর পদক এবং মোতাহার হোসেন পদক ছাড়াও অনেক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।

নিরহঙ্কারী মানুষ ও সহনশীল রাজনীতির প্রবক্তা সৈয়দ আবুল হোসেন স্বল্প সময়ের মধ্যে সবার নজরে নমস্য বিমূর্ততায় অভিভূত হয়ে উঠেছেন। বহুমুখী তার যোগ্যতা। তিল তিল পরিশ্রমে সাকো ইন্টারন্যাশনালের মতো বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক হয়েও নিতান্তই অনাড়ম্বর। ব্যবসার মতো রাজনীতিতেও ঈর্ষণীয় সাফল্যের অধিকারী। তবু নির্লোভ। যার লোভ নেই, তিনি সবার কাছে লোভনীয়, আকর্ষণীয়। মন্ত্রণালয়ে সচিব হতে শুরু করে পিয়ন, গ্রামে ধনী হতে শুরু করে ভিক্ষুকÑ সবার প্রতি সমভাবালুতা সৈয়দ আবুল হোসেনের মহানুভবতার অনাবিল প্রমাণ।


Syed Abul Hossain in International Arena

সৈয়দ আবুল হোসেনের কথা, আচরণ কিংবা ব্যবহারে প্রতিপক্ষ কখনও আহত হন না। তিনি কাউকে কষ্ট দিয়ে কোনো কথা বলেন না। সংসদে, মাঠে, রাজনীতিক মঞ্চে, অফিসে, মন্ত্রণালয়েÑ সবখানে তিনি অমায়িক, মার্জিত। কেউ তাঁর প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে উঠলেও তিনি ক্ষুব্ধ হন না। তিনি ‘রাগ ও ক্ষুব্ধতাকে’ পাগলামির নামান্তর মনে করেন। অনেক সময় অনেকে তাঁর প্রতি ক্ষুব্ধ হন। তিনি থাকেন সাবলীল, সহাস্য। এরূপ হাসি দিয়ে তিনি কত রাগান্বিত লোকের হƒত স্বাভাবিকতা পুনরায় ফেরত দিয়েছেন তার ইয়ত্তা নেই। কৃতজ্ঞতা তাঁর চরিত্রের আর একটি বিশেষ গুণ। কেউ তাঁর সামান্য উপকার করলে তিনি তা কথা, কাজ আর নিষ্ঠা দিয়ে অসংখ্যভাবে ফেরত দিয়ে দেন। মার্জিত ভাষা ও সুললিত কণ্ঠের অধিকারী সৈয়দ আবুল হোসেনের কণ্ঠ যেমন মুগ্ধকর তেমনি অনাবিল, মধুময়। প্রতিটি বাক্য অকাট্য যুক্তির নির্যাস; স্পষ্ট এবং অর্থবহুল। অপ্রয়োজনীয় কথা বলাকে তিনি অপ্রয়োজনীয়ভাবে বুলেট ছোড়ার সামিল মনে করেন। যথাযোগ্য মর্যাদা প্রদান ও ব্যক্তি নির্বাচনে তাঁর জুড়ি নেই। প্রাক্তন সচিব সৈয়দ আলমগীর ফারুক চৌধুরীর ভাষায়: কোনো ব্যক্তিকে কি দায়িত্ব দিতে হবে তা তিনি লোকটিকে এক পলক দেখেই বুঝে নিতে পারেন। 
কর্মস্থলে তিনি অমায়িক বাৎসল্যে পরিশুদ্ধ একটি আলোকবর্তিকা। সৈয়দ আবুল হোসেনের সংস্পর্শ সবাইকে পরশপাথরের মত বদলে দেয়, গড়ে তুলে নতুন ভাবনার চিরন্তন সৌকর্যে। তিনি বলেন কম, প্রকাশ করেন অধিক। শোনেন বেশি, শুনান কম। আইন-কানুন, বিধি-বিধান, রাষ্ট্র ও প্রশাসন সম্পর্কিত খুঁটিনাটি বিষয়ে তার সম্যক জ্ঞান রয়েছে। পরাজয় স্বাভাবিক, তাই বলে পরাজয়কে বিনা প্রতিরোধে মেনে নেয়ার পাত্র তিনি নন। পরাজয় তাঁকে আহত করে না, বরং নব-প্রত্যয়ে দীপ্ত করে। ভুল হতে শিক্ষা নিয়ে ভুলের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন অবলীলায়। তাঁর ভাষায়, ‘আই এ্যাম এ সেল্ফমেইড ম্যান, আই থিংক এভরিওয়ান ক্যান রিচ, হোয়ার আই এ্যাম; শো আই হ্যাভ রেসপেক্ট ফর অল।’

জীবনকে কর্মনিষ্ঠার মাধ্যমে সততার সাথে পরিচালনা করেন বলে তাঁর মুখে হাসির ছটা বৈকালিক প্রহরের মতো লেগে থাকে। তাঁর কাজ মমতায় জীবন্ত, শাসনবিন্দু রূপোলি আলোর মতো মুগ্ধকর। রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, কলামিস্ট, সমাজ-সংস্কারক, শিক্ষানুরাগী, সংগঠক, লেখক, মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য এতগুলো প্রত্যয়কে নিয়েও তিনি পথ চলেন স্বাচ্ছন্দ্যে। ব্যাঘাত ঘটে না সংসার জীবনের। সময় দেন সবাইকে যার যেমন প্রাপ্য। উপস্থিত হন যেখানে প্রয়োজন। সৈয়দ আবুল হোসেন দেশপ্রেমিক। জাতির দুঃসময়ে আপন বলয়ে সামর্থ্যরে পূর্ণ ডালা নিয়ে এগিয়ে যান মানুষের প্রয়োজনে, জাতির কল্যাণে। উজাড় করে দেন নিজের সামর্থ্য।

কর্মে তিনি গণিতের মতো আক্ষরিক, চিন্তায় সময়ের মতো গতিশীল, ভালোবাসায় প্রকৃতির মতো লাস্যময়, স্নেহে পিতার মতো সুবিনয়; বিপদে ধরিত্রীর মত ধৈর্যশীল। তিনি আগামীকালের অপেক্ষায় থাকেন না, ওটি কখনও আসে না। আবার সাফল্যের জন্যও অপেক্ষা করেন না। সাফল্যের জন্য অপেক্ষা করার সময় তাঁর নেই। তাই সাফল্য ছাড়াই তিনি এগিয়ে চলেন। বাধ্য হয়ে সাফল্যই তাঁর পিছু নেয়। তিনি লক্ষ্যে স্থির। কোথাও তাড়াতাড়ি পৌঁছার চেষ্টা করার আগে কোথায় যেতে হবে এবং কীভাবে যেতে হবে সেটিই আগে স্থির করে নেন। তাই তাঁর লক্ষ্য চ্যুত হয় না, সময় অপচয় হয় না। তিনি অতীতের জন্য আফশোস করেন না এবং ভবিষ্যতের কথা ভেবে অস্থিরও হন না। তাই সর্বক্ষণ অবিচল থাকতে পারেন। সৈয়দ আবুল হোসেন মিতভাষী। অপ্রয়োজনীয় কথা বলেন না। কর্ম, জয়-পরাজয় ও ত্যাগ এ ত্রয়ী সমন্বয়ে জীবনের প্রতিটি বিষয়কে উপভোগ করেন নৈসর্গিক সৌন্দর্যের নির্মল আনন্দে। লক্ষ্য ভেদকে সৈয়দ আবুল হোসেন গন্তব্যস্থল মনে করেন না, মনে করেন পরবর্তী যাত্রার হাতছানি। পথ যত লম্বা হোক তার নজর সেদিকে পড়ে না। তিনি বিশ্বাস করেন, যার আরম্ভ আছে তার শেষও আছে। অসীমতার শুরু বিন্দু হতে। যেখানে পুরাতনের শেষ সেখানে নতুন কিছুর শুরু। অনেকে রাজনীতি করেন ক্ষমতার জন্য, ভোগের জন্য। সৈয়দ আবুল হোসেন রাজনীতি করেন ত্যাগের জন্য, উন্নয়নের জন্য। রাজনীতিতে আসার পর তিনি রাজনীতি হতে এক পয়সাও লাভবান হননি বরং তাঁর আগমন বাংলাদেশের রাজনীতিকে সমৃদ্ধ করেছে, পরিশুদ্ধ করেছে। পরের ধনে পোদ্দারি কি রাজনীতি? আমাদের দেশে রাজনীতি মানে পরের ধনে পোদ্দারি, ছোট ছোট জনগণের বিন্দু বিন্দু ক্ষমতা জড়ো করে অধিকাংশ রাজনীতিক জনগণের উপর পোদ্দারি করেন। সৈয়দ আবুল হোসেন এমন একজন মানুষ যিনি জনগণের ক্ষমতা জনগণকে ফিরিয়ে দিয়ে পুরো নিঃস্ব হবার প্রত্যয়ে দৃপ্ত। নিপাট অধ্যবসায়, প্রগাঢ় মনোনিবেশপ্রসূত অভিজ্ঞান ও কৃতজ্ঞতার তিলোত্তম মহিমায় বিভূষিত এবং অভাবনীয় অন্তর্দৃষ্টি ও যৌক্তিক মিথষ্ক্রিয়ার মাঝে সত্য-মিথ্যা ও বাস্তবতাকে চিহ্নিত করে উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার এক অলৌকিক ক্ষমতা রয়েছে সৈয়দ আবুল হোসেনের। তাই তিনি পা হতে মাথা পর্যন্ত মননে-দর্শনে পরিপূর্ণ আদর্শের অনুসরণীয় একজন আকর্ষণীয় নেতা।
সৈয়দ আবুল হোসেন রাজনীতিবিদ, তবে গতানুগতিক নন। তিনি যুক্তিতে অমিয়, বস্তুনিষ্ঠায় অনুপম। বাংলাদেশে তিনি সহনশীল রাজনীতির প্রবক্তা হিসেবে পরিচিত। রাজনীতির মাঠেও প্রতিদ্বন্দ্বীর গলা জড়িয়ে ধরতে পারেন পরম ভালোবাসায়, নিবিড় শ্রদ্ধায়। তাঁর নির্বাচনী এলাকায় কোনো দলবাজি নেই। উন্নয়ন ছাড়া তিনি কিছু বোঝেন না, ভালোবাসা ছাড়া কিছু অনুভব করেন না। তাঁর ভোটারগণও তাঁর প্রতি অনুরূপ অনুরক্ত। তারা সৈয়দ আবুল হোসেন ছাড়া আর কিছু বোঝেন না। তাই নির্বাচনী এলাকায় না গিয়েও তিনি বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে আসেন।

ধর্ম সম্পর্কে তাঁর ধারণা, অভিব্যক্তি ও বিশ্বাস যেমন উদার তেমনি প্রজ্ঞাময়। তিনি মুসলমান, বিয়ের পূর্বে হজ করেছেন। নিয়মিত নামাজ আদায় করেন। তাঁর শরীরে হযরত আলীর রক্ত। তবে তিনি অসাম্প্রদায়িক। তাঁর ভাষায়, ‘চূড়ান্ত বিশ্লেষণে হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সকলেই একই স্রষ্টার সৃষ্টি। তিনি বলেন, মানবতার চেয়ে বড় ধর্ম আর নেই। আমি সে মানবতায় বিশ্বাসী। চিন্তা ও চেতনায়, কাজে ও কর্মে একজন মানবতাবাদী ধর্ম নিরপেক্ষ ব্যক্তি হিসেবে আমার অবস্থান। সে ভাবেই আমি শিক্ষা পেয়েছি। সেভাবেই জীবন গড়েছি। মনুষ্যত্বের পরিচয়েই আমি মানুষকে বিচার করে থাকি। আমার কাছে সবসময় মানুষই বড়। আমার ব্যবহারিক জীবনেও এ আদর্শই আমি সবসময়েই অনুসরণ করে আসছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘একটি অসাম্প্রদায়িক খাঁটি বাঙালি পরিবেশে আমি মানুষ হয়েছি এবং সেই শিক্ষাই ধারণ করে চলেছি। সেই শিক্ষাই ধারণ করে চলব আমৃত্যু। সেই শিক্ষাই আমাকে প্রণোদিত করেছিল, উদ্বুদ্ধ করেছিল মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিতে। নারীর ক্ষমতায়ন ও মর্যাদা রক্ষায় সৈয়দ আবুল হোসেনের আন্তরিকতা সতত প্রশংসনীয়। নারী শিক্ষার প্রসারে তিনি নিজ গ্রামে প্রতিষ্ঠা করেছেন শেখ হাসিনা একাডেমি এন্ড উইমেন্স কলেজ। ঐ কলেজে অধ্যয়নরত ছাত্রছাত্রীদের যাবতীয় ব্যয়ভার সৈয়দ আবুল হোসেন নিজেই বহন করেন। নারী ও নারীশিক্ষার প্রতি সৈয়দ আবুল হোসেনের দরদ প্রকাশ করতে গিয়ে তাঁর এক বাল্যবন্ধু বলেন, ‘কোনোদিন তাকে আমি কোনো মেয়ের প্রতি অসৌজন্যমূলক আচরণ করতে দেখিনি। কোনো মেয়ের প্রতি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কটাক্ষ করতেও দেখিনি। সে এগুলো প্রচন্ড ঘৃণা করত। নারীর প্রতি এত মর্যাদা দিতে আর কোনো মানুষকে আমি দেখিনি। নারী শিক্ষার জন্য তাঁর আগ্রহ নারীর প্রতি মর্যাদা ও তাদেরকে আর্থসামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে তাঁর আগ্রহের প্রমাণ বহন করে। সে এখন নারীশিক্ষার জন্য অনেক স্কুল কলেজ ও কর্মমুখী প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে। বাংলাদেশে তাঁর চেয়ে অনেক ধনী ব্যবসায়ী, অনেক বড় রাজনীতিবিদ আছেন; কিন্তু কে কয়টা সৈয়দ আবুল হোসেন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের মতো আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন! কালকিনির সৈয়দ আবুল হোসেন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, খোয়াজপুরের সৈয়দ আবুল হোসেন কলেজ, ডাসারের শেখ হাসিনা উইমেন্স একাডেমি এন্ড কলেজ, ডি কে সৈয়দ আতাহার আলী একাডেমী এন্ড কলেজে শিক্ষাক্ষেত্রে অহঙ্কারের নৈবদ্যিক সংযোজন। তাঁর বৃত্তিতে প্রতি বছর হাজার হাজার ছাত্র লেখাপড়ার সুযোগ পাচ্ছে। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাসহ শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ আবুল হোসেন সাধারণ পারিপার্শ্বিকতায় বেড়ে ওঠা অসাধারণ একজন মানুষ। যার শেকড় পাতালে, মস্তক কল্পনার আকাশ ছুঁয়ে স্তম্ভিত অপলক।
কেন তিনি শিক্ষাবিস্তারে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠায় এত ব্যাকুল? অনেকে নামের জন্য, প্রচারের জন্য প্রতিষ্ঠান করেন। তবে সৈয়দ আবুল হোসেনের মানসিকতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। কেন তিনি শিক্ষার প্রসারে এত উদগ্রীব তা তাঁর জবানিতেই শোনা যাক :
টলস্টয় বলেছেন- ‘বিদ্যালয়ই উন্নতির মাধ্যম। বিদ্যালয়ই মানুষকে সভ্য করে তোলে।’ এলজিা বফ চমৎকার কথা বলেছেন। তার মতে, ‘বয়স্কদের জন্য কারাগার অথবা ফাঁসিমঞ্চ নির্মাণ করার প্রয়োজন কমে যাবে যদি উত্তম বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা যায়।’ আমি মনে করি এর চেয়ে সত্য কথন আর হয় না। বিদ্যালয়ে জ্ঞান অর্জন করলে চরিত্র গঠিত হয়। ন্যায় অন্যায়ের পার্থক্য বোঝা যায়। অপরাধ প্রবণতা হ্রাস পায়। তাহলে আর কারাগার বা ফাঁসির মঞ্চের প্রয়োজন রইল কোথায়? সুতরাং আমি মনে করি কারগার নির্মাণে মনোযোগ দেয়ার চেয়ে অধিক হারে বিদ্যালয় নির্মাণে, শিক্ষার প্রসারে মনোযোগ দেয়া দরকার। সে কারণেই আর একজন জ্ঞানী ব্যক্তি বলেছেন, ‘স্কুল তৈরির মতো মহৎ ও কল্যাণকর কাজ আর দ্বিতীয়টি নেই’। এই চিন্তাচেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আমি আমার সাধ্যমতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলায় আত্মনিয়োগ করেছি। আমি মনে করি, এটা আমার সামাজিক অঙ্গীকার। দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি আমার কর্তব্য। আমি সিক্ত আমার এলাকার মানুষের ভালোবাসায়। তাদের কাছে আমার ঋণের শেষ নেই। সেটা আমি শোধ করতে পারি শিক্ষার আলো জ্বেলে বা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। ব্যক্তিকে সাহায্যদানের আবেদন সব সময়ই সাময়িক। প্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার আবেদন কালজয়ী।’ সৈয়দ আবুল হোসেন ঠান্ডা মেজাজের লোক। কষ্ট বা রাগে হয়ত বুক ফেটে চৌচির হয়ে যায়, তবু মাথা ঠান্ডা রাখেন। কোনো অবস্থাতে মাথা গরম করেন না। ফলে কথাবার্তা কখনও শালীনতার পর্যায়কে অতিক্রম করতে পারে না। তাই যে কোনো বিপদে তিনি অস্থির নাÑহয়ে চিন্তা ভাবনা করে অগ্রসর হতে পারেন। তিনি আপাদমস্তক কুশলী ও বিচক্ষণতায় মোড়া। এমনভাবে বলেন, যাতে কেউ কষ্ট না-পায়, এমনভাবে দেখেন যাতে কারও মনে দুঃখ বা ভীতির সঞ্চার না হয়; বরং আনন্দ জাগে। কারও সমালোচনা করার সময়ও শালীনতাবোধ বজায় রাখেন। তিনি তর্কে যৌক্তিক, চেতনায় উদার। কথা বলার সময় কোটেশনের পর কোটেশন দিতে পারেন। কথার মাঝে কিছু রস থাকে। যা কথাগুলোকে উপভোগ্য এবং হƒদয়গ্রাহী করে তোলে। তবে ব্যক্তিত্বের হানি হয় না। তিনি রাগ সম্পর্কে তাঁর একটা নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি আছে। সেটি হল- এতগুলো প্রত্যয়কে সমন্বয় করে রাগ করা পৃথিবীর খুব কম মানুষের পক্ষে সম্ভব। তাঁর চাইতে নিজের রাগকে গোপন রাখাই সর্বোত্তম।

বাংলা সাহিত্যের দিকপাল সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ভাষায়, ‘সৈয়দ আবুল হোসেন খুবই শ্রদ্ধেয় এবং একজন বিরাট মাপের মানুষ।’ তিনি সময়, মানুষ, রাজনীতি, পারিপার্শ্বিক বলয়, আর্থসামাজিক অনুরণন ও স্বীয় জীবনকে পরিশীলিত মাধুর্যে সমন্বয় করে আর্থ-সামাজিক ও রাজনীতিক ব্যবস্থার প্রতিটি ক্ষেত্রকে অমিয় মহিমায় উদ্ভাসিত করতে সক্ষম একজন পরিপূর্ণ মানুষ। সময়কে তিনি আধুনিকতার সাথে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। তাই তিনি সময়ের পরশপাথর। -মোহাম্মদ আমীন : লেখক, সাহিত্যিক, কলামিস্ট ও ইতিহাসবেত্তা






কার পাপে কে সাজা পায়?

ভারতীয় একটি বাংলা ছবি সবার উপরে নায়ক উত্তম কুমারের বাবার ২২ বছর মিথ্যা খুনের দায়ে জেল হয়েছিল। যখন প্রমানিত হল যে আসল খুনি অন্য কেউ, তখন উত্তম কুমারের বাবা আসামীর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বলেছিলেন -""মিথ্যে এ বিচার, এ রায় এ প্রহসনের রায় আমি মানিনা; আমি মুক্তি চাইনা; ফিরিয়ে দাও আমার সে ২২ টি বছর""
*
সৈয়দ আবুল হোসেনের সারা জীবনের অর্জনকে হিলারী ইউনুস খালেদা মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন দুর্নীতির অপবাদে মন্ত্রীত্বই শুধু কেড়ে নেয়নি; সৈয়দ আবুল হোসেনের সারা জীবনের স্বপ্ন সাধনা এবং দেশ ও জাতির জন্য বিশেষ করে শিক্ষা ক্ষেত্রে যূগান্তকারী অবদানের মাধ্যমে অর্জিত সকল মান সন্মান খ্যাতিকে কলংকিত করেছিল; কলুষিত করেছিল বাঙ্গালী জাতিকে, কলুষিত করেছিল শেখ হাসিনার সরকারকে। 
বলা হয়েছিল " বিশ্ব ব্যাংক পদ্মা সেতু নির্মাণে কোন প্রকার সাহায্য সহযোগিতা করবে না কারন বাংলাদেশ সরকার ও বিভাগীয় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রক ক্যানাডিয়ান নির্মাতা কোম্পানীর নিকট কোটি ডলার উতকোচ দাবী করেছে এবং আরো অনেক রকম সীমাহীন দুর্নীতি ধরা পড়েছে" 
আসলেই ছিল এটা হিলারী বয়ফ্রেন্ড ইউনুসের চাল এবং খালেদার ইন্দন। কিন্তু সৈয়দ আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ মিথ্যা প্রমানিত হয়েছে ক্যানাডিয়ান আদালতে।

Saturday, April 14, 2018

শুভ নববর্ষ ১৪২৫

শুভ নববর্ষ ১৪২৫ গতকাল আমার ৬৫তম জন্ম দিনে অসংখ্য ভক্ত অনুরাগী বন্ধু ভাই ভ্রাতা ভগ্নি ফেসবুক টুইটর ইয়াহু ওয়ার্ডপ্রেস লিংকড ইনষ্টগ্রাম গুগল ফ্লিকারে শুভেচ্ছা দিয়েছেন। ব্যক্তিগতভাবে ধন্যবাদ প্রদান করা সম্ভব ছিল না। সবাই ভালো থাকুন, সবাই সুস্থ্য থাকুন, সুন্দর থাকুন, সকলের জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত কাটুক আত্মীয় পরিজন বন্ধু বান্ধব মা বাবাকে নইয়ে নিশ্চিন্তে নিরুদ্বেগে শান্তিতে সুখে সমৃদ্ধিতে। সকলের জীবনের সকল কষ্ট বেদনা হতাশা ব্যর্থতার গ্লানি মুছে যাক বৈশাখী দক্ষিণা সমীরনের দমকা হাওয়ায়। ভরে উঠুক বাঙ্গালীর জীবনের প্রতিটি কানায় কানায় । হৃদয়ের রন্দ্রে রন্দ্রে বেজে উঠুক সাম্যের গান-আল ক্বোর'আন, গীতা , বাইবেল, ত্রিপিটক ও বিধাতার প্রতি আনুগত্য ও কৃতজ্ঞতার সমীহ শ্রদ্ধা ভক্তি একান্ত আত্মসমর্পণ। সুখে থাকুক গোপালগঞ্জের হতভাগা চির অভাগা চির বঞ্চিত লাঞ্ছিত শেখ লুতফর রহমানের সোনার ছেলে শেখ মুজিবের ১৬ কোটি ৩৫ লক্ষ মানুষ; যে একটি মানুষ স্ত্রীপুত্র কন্যা মা বাবা ভাই বোন থেকে বঞ্ছিত হয়ে সারাটি জীবন এই বাঙ্গালীর জন্য দেশ থেকে দেশান্তরে গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া কখনো পায়ে হেটে কখনো নৌকায় আবার কখনো ভাংগা গাড়িতে চড়ে হতভাগা হতদরিদ্র্য চির লাঞ্ছিত বঞ্চিত অবহেলিত শোষিত দুখি বাঙ্গালীর খোজ নিতে গিয়ে নিজের জীবনের সকল সুখ শান্তি বিসর্জন দিয়েছিলেন বদ্ধ জেলখানায় বসেও যার বাঙ্গালীর চিন্তায় নিদ্রায় যেতে পারতেন না, সে সোনার দেশের সোনার ছেলে গোপালগঞ্জের শেখ মুজিবের অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে উদ্গত ভালোবাসায় সিক্ত বাংলাদেশ ও বাঙ্গালী জাতি বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সমৃদ্ধশালী দেশ হয়ে উঠুক। বাঙ্গালী থাক মাছে ভাতে দুধে আমে মিষ্টিতে অনাদিকাল বৈশাখের ১ম দিনের প্রথম বৃষ্টির পবিত্র জল্ধারায় ধুয়ে মুছে নিষ্কলঙ্ক নিস্পাপ হয়ে যাক বাঙ্গালী জাতি।

SUPPORT AWAMI LEAGUE, VOTE NOUKA ONCE AGAIN

Monday, March 5, 2018

অশিক্ষিত মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা ও ভাতা প্রসঙ্গে এত জ্বলন কেন? মোকতেল হোসেন মুক্তি

অশিক্ষিত মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা ও ভাতা প্রসঙ্গে এত জ্বলন কেন? মোকতেল হোসেন মুক্তি
“সাত কোটি সন্তানেরে হে মুগ্ধ জননী, রেখেছ বাঙ্গালী করে মানুষ করনি”-

former secretary Nazrul Islam khan N I Khan নামেই বেশী পরিচিত। সাবেক এই সচিব মহান মুক্তিযুদ্ধ বঙ্গবন্ধু এবং জাতীয় ৪ নেতাদের নিয়ে অনেক গবেষণামূলক প্রবন্ধ লেখা লিখেছেন। মনে প্রাণেই মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তির একজন তুখোড় লেখক সমালোচক এবং গবেষক । তিনি উচ্চ শিক্ষিত বিধায় তাঁকে নিয়ে কোন খারাপ মন্তব্য করা সমীচীন নয়। কিন্তু একটি বিষয় আমার বোধগম্য হচ্ছে না যে তিনি কেন হঠাত করে মূর্খ গরীব অসহায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানের একান্ত প্রাপ্য জাতীয় মর্যাদা ও সন্মানাদি প্রসঙ্গে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদান এবং বিরুপ কঠোর সমালোচনামূলক বিতর্কের সৃষ্টি করলেন? একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি না পেলেও আমার সন্তান আমি বিদেশে নিজের কষ্টার্জিত অর্থেই লেখা পড়া করিয়েছি। নিজে যা'পারিনি তা' সন্তানদের পুরন করার এই যে মহান প্রত্যয় ও প্রত্যাশা তা' বাস্তবায়ন করা অতি হত দরিদ্র্য নিভৃত পল্লীর অখ্যাত অজ্ঞাত অশিক্ষিত একজন বয়োবৃদ্ধ মুক্তিযোদ্ধাদের দ্বারা আদৌ সম্ভব নয়। ১। মাদারীপুর কালকিনি উপজেলার কমান্ডার মুক্তিযুদ্ধকালীন আমার কমান্ডার New Zealand প্রবাসী Hanif Mahmud নিজেও উচ্চ শিক্ষিত এবং তাঁর সন্তানদের উচ্চ শিক্ষার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। ২। মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব প্রদানকারী সেক্টর কমান্ডারগণ/ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক/ইউনিক গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নূর আলী/নৌ পরিবহন মন্ত্রী মোঃ শাহজাহান খানসহ আরো অগনিত বীর মুক্তিযোদ্ধারা অথবা তাদের সন্তানেরা কি অশিক্ষিত? অন্যান্য বিত্তশালী উচ্চ শিক্ষিত বর্ণাঢ্য ব্যবসায়ী/শিল্পী/সাহিত্যিকগীতিকার/সুরকার/সচিব/কবি/লেখক/ডাক্তার/ইঞ্জিনিয়ারদের কথা না হয় উল্লেখ নাই করলাম। যাদের আর্থিক সঙ্গতি রয়েছে তাদের সন্তানদের শিক্ষা ও চাকুরীর ক্ষেত্রে এই বিতর্কিত মুক্তিযোদ্ধার কোটা প্রয়োজন নেই। তাই তাঁরা এ সব নিয়ে কখনো মাথায় ঘামাননি বা বিষয়টি এত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে কোন মিডিয়া বা পত্র/পত্রিকায় গুরুত্ব সহকারে আলোচিত হয়নি। আজ বঙ্গবন্ধু কন্যা এই হত দরিদ্র্য অজো পাড়া গায়ে অবহেলা অবজ্ঞা দীনহীন মানবেতর জীবন যাপন করা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মূল্যায়নের লক্ষ্যেই মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা/কোটা ইত্যাদিসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা যথা গ্যাস বিল পানি বিল বিদ্যুৎ বিল সিটি কর্পোরেশনের ট্যাক্স-আয়কর কিছুটা কমিয়ে সহজতর করার চেষ্টা করেছেন। যদিও এরই মধ্যে বিগত জামাত বি এন পি সরকারের অশুভ কর্ম পরিধি মুক্তিযোদ্ধার তালিকাকে কলুষিত ও কলঙ্কিত করেছে। তালিকায় নাম এসেছে ৪ বছরের দুধের শিশুর। বিধায় আসল মুক্তিযোদ্ধাদের অনেকেরই নাম আজো তালিকাভুক্ত হয়নি। যে সমস্যা নিয়ে আমরা অনেকেই হা হুতাশ এবং বর্তমান সরকারের মন্ত্রী নেতা ও কমান্ডারদের কঠোর সমালোচনা করে যাচ্ছি। অন্যদিকে অমুক্তিযোদ্ধা হাতিয়ে নিচ্ছে শেখ হাসিনার দেয়া সকল সুযোগ সুবিধাদি। "সকলের জন্য ধান, সকলের জন্য চাল, সকলের জন্য পানি, সকলের জন্য ভূমি, শিক্ষা, সকলের জন্য অন্ন বস্ত্র বাসস্থান, সকলের জন্য আর্থ সামাজিক উন্নয়নের সুসমবন্টন, সকলের জন্য মহান মুক্তিযুদ্ধের ফসল, সকলের জন্য একটি সুখি সাচ্ছন্দ জীবন ব্যবস্থার জন্যই জাতিরজনকের আজীবন সংগ্রাম এই মহান "স্বাধীনতা"। সাড়ে সাত কোটি থেকে আজ আমরা ১৬ কোটি ৩৫ লক্ষে পৌছে গিয়েও সমাধান করা সম্ভব হয়নি হতভাগা মুক্তিযোদ্ধাদের সমস্যা। এর মূল কারন ১৯৭৫ সালে জাতিরজনক ও মহান মুক্তিযুদ্ধের সফল সংগঠক জাতীয় ৪ নেতাকে হত্যা করে ক্ষমতা কুক্ষিগত করা এবং পাকিস্তান আই এস আই'র পা'চাটা কুকুর স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিকে জিয়াউর রহমানের মাধ্যমে পুনঃপ্রতিষ্ঠার ফলে হারিয়ে গিয়েছে আসল মুক্তিযোদ্ধারা এবং দেশপ্রেমিক সোনার মানুষগুলো। "৭৫ পরবর্তী এমনও পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে হয়েছে যে ভয়ে অনেকেই স্বীকার করেনি যে আমি মুক্তিযোদ্ধা" বা আওয়ামী লীগ সমর্থনকারী । কি ভয়াবহ ছিল বাঙ্গালী জাতির ২১টি বছর! ভাবতে গেলে গা'শিউরে ওঠে! লক্ষ করলেই দেখা যাবে যে স্বাধীনতা বিরোধী আল বদর আল শামস আল-রাজাকারের কোন সন্তান অশিক্ষিত নয় এবং দারিদ্র্যসীমার নীচে জীবন প্রবাহ অতিবাহিত করে না। ভাগ্নে সজীব ওয়াজেদ জয় " একটি ডিজিটাল বাংলাদেশ' এর একটি সেমিনারে উল্লেখ করেছিলেন " মহান স্বাধীনতায় বাঙ্গালী জাতি বিজয় অর্জন করলেও স্বাধীনতার সুফল মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তির ঘরে পৌছায় নি" কথাগুলো একটি ছোট মানুষের হলেও বিশাল এবং ব্যাপক অর্থে মহা দর্শনের চেয়েও অপরিসীম গুরুত্বপূর্ণ ছিল সজীব ওয়াজেদ জয়ের সে বক্তব্য। অতি সম্প্রতি ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির জনৈক মুনতাসীর মামুন স্যার এবং শাহরিয়ার কবীর (যিনি জীবনে তাঁর কোন লেখায় বঙ্গবন্ধুকে জাতিরজনক বলে স্বীকার করেন নি বা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কোন লেখা প্রবন্ধ গল্প কাহিনী কখনো লিখেন নি কিন্তু তিনি রাজাকারের ফাসি চেয়েছেন) এই মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেছিলেন এবং পরবর্তীতে নেত্রীর পরোক্ষ ধমক অর্থাৎ সান্টিং খেয়েই দালাল নির্মূল কমিটির দালালগণ থেমে গিয়েছিলেন। মুনতাসীর মামুন সাহেব আবার আওয়ামী লীগ সরকারের পয়সায় ইতোমধ্যে পবিত্র হজ্বব্রতটিও বীনা পয়সায় সেরে নিয়েছেন। যাক সে কথা লিখছিলাম। একটি বিষয় আমি ৭১ থেকে এ পর্যন্ত অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে লক্ষ করে এসেছি এবং হিসাব মিলিয়েও দেখেছি যে সাবেক শিক্ষা সচিব নজরুল ইসলাম খান স্যারের কথার মধ্যে কিছুটা সত্যতা খুজে পেলেও এই ভাতা ও কোটার বিরুদ্ধে তাঁর মত বিচক্ষন ব্যক্তি জাতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সর্ব উচ্চ ডিগ্রিধারী একজন পণ্ডিত ব্যক্তির বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তি সমর্থকের কলামে/ভাষায়/লেখায়/বলায়/ তর্কে /বিতর্কে বিরোধীতা কেমন যেনো বেমানান এবং অশালীনতার মতই গা'জ্বালাময় বক্তব্য। আমি তাঁকে চিনি এবং জানি। তিনি মনে প্রাণেই জাতিরজনকের একান্ত ভক্ত অনুসারী । কিন্তু এই হতভাগা দীনহীন অশিক্ষিত হত দরিদ্র্য অজো পাড়া গায়ের সর্ব কালের সর্ব শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের "অশিক্ষিত বা মূর্খ" শব্দটি ব্যবহার করে সর্বনাশ করে দিলেন! আমি হতবাক নজরুল স্যার! আপনার মত ব্যক্তির মূখে মুনতাসীর মামুন ও শাহরিয়ার কবীরের মত বস্তাপচা সস্তা হাত তালির প্রত্যাশায় এহেন বক্তব্য নিদারুণ বেদনাদায়ক এবং অসহনীয়। আমার গ্রামে আব্দুর রহিম সরদার নামে একজন মুক্তিযোদ্ধা। যার সন্তান এস এস সি পরীক্ষা দেবার ফি না দিতে পারার কারনে ঘরে বসে কাদতে ছিলেন। তারপরে যেভাবেই হোক অন্য কেউ ব্যবস্থা করেছিল। আজ যদি এই হত দরিদ্র্য আব্দুর রহিম সরদারের অর্থ থাকত তাহলে ইউনুক গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নূর আলি স্যারের মতই এই রহিমের ছেলেও আমেরিকান ইন্টারন্যাসনাল স্কুলে ইংলিশ মিডিয়ামে নিউ ইয়র্কে লেখা পড়া করত এবং মাসের ঐ ১০ হাজার টাকা ভিক্ষা এবং ছেলেকে ভর্তি ফি না দিতে পারার যন্ত্রণায় কাতরাতে হতনা। কাজেই এই হত দরিদ্র্য রহিমের ছেলে যেভাবেই হোক পাস করে একটি চাকুরী নিতে যাবে। ১০০ মার্কের মধ্যে যদি সে ৮০ থেকে ৯০ ও প্রাপ্ত হয় তার চাকুরী হবে না। কেন জানেন? কারন একটি সরকারী চাকুরী নিতে গোটা দেশে এখন হাইব্রীড কাউয়া ফার্মের মূরগীর দালালদের নিকট প্রথমে দৌড়াতে হবে। তারপরে চুক্তি হবে দালালের সাথে। কত লাখ দিতে পারবেন? না না তা' হবে না, কারন মন্ত্রী সাহেবকেই দিতে হবে ৫ লাখ। তারপরে ওমক নেতাকে দিতে হবে এবং এর মধ্য থেকেই আমার % রাখতে হবে। এখন আসুন আসল কথায় আমার গ্রাম দক্ষিন আকাল বরিশ ঐ যে হতভাগা বৃদ্ধ মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিম সরদারের ছেলে গল্প বলছিলাম-সে আব্দুর রহিম সরদার ওর বাপ দাদা ১৪ গুষ্ঠির সকল ঘর বাড়ী সহায় সম্বল কম্বল বিক্রয় করলেও ২ লাখ টাকার বেশী যোগার করতে পারবে না। আমার আত্মীয় আমার সহপাঠী, সহযোদ্ধা বন্ধু, আমি তার একান্তজন হিসেবে সবই জানি। সে আমারই এক ছাত্রীকে বিয়ে করেছিল। তাহলে নজরুল স্যার আপনি যে বললেন সকল % কেটে মাত্র ৫% কোটা মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সীমিত রাখতে, বাকীটা কি ঐ সকল আল বদর আল শামস আল রাজাকারের সন্তানের জন্য রাখতে বলছেন? নাকি আপনার ছেলে মেয়ে অথবা মুনতাসীর মামুন ও শাহরিয়ার কবীরের ছেলে মেয়েদের জন্য রাখতে বলছেন? তবে স্যার একটা কথা জেনে রাখবেন-মনে রাখবেন " জাতিরজনকের ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ ও ২৬শে মার্চের স্বাধীনতার ঘোষণায় উল্লেখ করা উচিত ছিল যে অশিক্ষিত মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করতে পারবে না - শুধু আপনাদের মত মহা জ্ঞানপাপী পন্ডিত বর্ণাঢ্য ব্যবসায়ী সুদখোড় ইউনুসের মত ধনকুবের লুটেরা, রাজাকার মুসা বীন শমসেরের (লুনা মুসার) মত গোটা বাংলাদেশের খেতে খামারে ব্রিটিশ সরকারের গাঁরা ম্যাকনেট চুরি করে বিক্রয়কারী) মুনতাসীর মামুনের মত দালাল এবং শাহরিয়ার কবীরের মত সুবিধাভোগি চাটুকর তোষামোদকারীরাই মুক্তিযুদ্ধ করতে পারবে। যেহেতু বঙ্গবন্ধু কৃষক শ্রমিক জেলে তাতী কামার কুমার ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার কবি শিল্পী সাহিত্যিক লেখক নৌকার মাঝি ইঞ্জিনের ড্রাইভার অথবা রিকশা/ভ্যানগাড়ী চালক/বাসের ড্রাইভার/হেল্পার/ঠিকাদার কারো কথাই বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে স্পষ্ট উল্লেখ করেননি। সেহেতু আপনাদের এহেন অবান্তর অহেতুক কোটার বিরোধী তথা হত দরিদ্র্য দীনহীন মজদুর অজো পাড়া গায়ের নিভৃত পলীতে রাত দিন আপনাদের মূখের অন্ন ফলানোর কাজে ব্যস্ত বয়োবৃদ্ধ অশিক্ষিত মুক্তিযোদ্ধের "অশিক্ষিত" বলে সম্বোধন করে মহান মুক্তিযুদ্ধের মহা নায়ক হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতিরজনকের বিদেহী আত্মাকে কষ্ট দেবার চেষ্টা থেকে বিরত হোন। আপনি ভালো থাকুন। সুন্দর থাকুন। আমরাত অশিক্ষিতই; সে দোষ ত আমাদের না স্যার? সে দোষ পশ্চিমা শোষক হায়েনা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ লিয়াকত আলী খান আইউব খান টিক্কা খান, মোনায়েম খানদের। “সাত কোটি সন্তানেরে হে মুগ্ধ জননী রেখেছ বাঙ্গালী করে মানুষ করনি।”- কবির এ মর্মবেদনা অনেক পুরোনো।সেদিনের কবির চেতনায় আগুন ধরেছিল বঙ্গ সন্তানদের চেহারা দেখে। তাই বড় আফসোস করে কবি তার বেদনা দগ্ধ চেতনার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন কাব্যিক ছন্দে।কিন্তু আজ অনেক চড়াই উৎরাই ঘাত প্রতিঘাত আর উস্থান-পতনের মাধ্যমে স্বাধীনতার এতো বছর পরেও বাঙ্গালীর জাতির পিতা নিয়ে আমরা নষ্ট খেলা,ইতিহাস নিয়ে টানাটানি এবং অপবাদ নিয়ে মেতে আছি। আমরা আজ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যে, সংশয় এবং মানা না মানার মধ্যে দিয়ে যে নষ্ট খেলায় মেতে আছি তা শুধু আমাদের জন্য অপমান জনক না বরং তা আমাদের বিশ্বের মানচিত্রে অতি নগ্ন হিসাবেই পরিচিত লাভ করাতে দ্বিগুন সাহায্য করে। ঠিক তেমনি মুক্তিযোদ্ধার তালিকা প্রণয়নে এবং ভাতা ও কোটা নিয়েও আপনারা আজ জাতিরজনক নেই বলেই টানা হেচড়া করে সন্মানের বদলে অসন্মান করছেন। তাহলে আমাদের ঢাকা ষ্টেডিয়ামে ডেকে কেন বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালে অস্ত্র জমাদানের প্রাক্কালে জীবন প্রদ্বীপ নিভিয়ে দিলেন না?

Monday, February 19, 2018

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবনের কতটুকু আপনার জানা।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবনের কতটুকু আপনার জানা। আপনি জেনেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে মেনে চলেন নাকি অন্যের নিকট শুনে বিশ্বাস আত্মবিশ্বাসে মুজিবসেনা বলে নিজেকে দাবী করেন? 

একটু সময় নিয়ে মিলিয়ে নিন। ১৯৩৮-১৯৭৫ পর্যন্ত।
 জন্ম: ১৯২০ সালের সতের মার্চ ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে।
১৯৩৮ সালে তৎকালীন বাংলার শ্রমমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সাথে পরিচয় ও সাহচর্য লাভ।
" " মিথ্যা অভিযোগে প্রথম বারের মত গ্রেপ্তার, সাতদিন পর জামিন লাভ।
১৯৩৯ সালে সোহরাওয়ার্দীর সাথে কলকাতায় যোগাযোগ, গোপালগঞ্জ মুসলিম ছাত্রলীগ ও মুসলীম লীগ গঠন। শেখ মুজিব সাধারণ সম্পাদক হন।
১৯৪১ সালে ম্যাট্রিক পাশ।
" " কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে র্ভতি।
১৯৪৩ সালে প্রাদেশিক মুসলিম লীগ কাউন্সিলের সদস্য হন।
১৯৪৬ সালের নির্বাচনে মুসলীম লীগের পক্ষে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করেন। সোহরাওয়ার্দী সাহেব প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।
১৯৪৬ সালের জুলাইয়ে কলকাতা ও বিহারে হিন্দু মুসলমান দাংগা বন্ধে ও আহতদের পূর্নবাসনে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন।
১৯৪৭ এ পাকিস্তান ভাগের সময় আসামের জেলা সিলেটকে বাংলাদেশে রাখার বিষয়ে গনভোটে সক্রিয় কার্যক্রম চালান।
" " ব্যারাক পুরে মহাত্মা গান্ধীর সাথে সাক্ষাত, তাকে কলকাতা-বিহার দাংগায় তোলা নৃশংস হত্যাকান্ডের ছবি এলবাম আকারে উপহার প্রদান।
" " কলকাতা ত্যাগ, ঢাকায় আগমন।
" " ঢাকায় কনফারেন্স, যুব প্রতিষ্ঠান গড়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত, নাম গণতান্ত্রিক যুবলীগ, সাবজেক্ট কমিটি গঠন। শেখ মুজিব কমিটির সদস্য। পরবর্তীতে কমিউনিস্টদের
অনৈতিক সংখ্যাধিক্য ও বাড়াবাড়ির কারণে শেখ মুজিব সহ মুসলিম লীগ পন্থীরা সংগঠন ত্যাগ করেন।
১৯৪ সালের ৪ জানুয়ারি পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ গঠন। (তখনও মুসলিম লীগের সদস্য থাকায় নিজে দায়িত্ব নেননি, তবে তিনিই প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন) নইমউদ্দিন কনভেনর হলেও মুল দায়িত্ব ছিল
বঙ্গবন্ধুর উপর। এক মাসের মধ্যে প্রায় সকল জেলায় কমিটি গঠন।
"" " মুসলিম লীগ ত্যাগ।
১৯৪৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারী করাচিতে পাকিস্তান সংবিধান কমিটির সভায় উদুর্কে রাষ্ট্রভাষা করার ব্যাপারে আলোচনা। পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের প্রতিবাদ সভা।
" " পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ ও তমদ্দুন মজলিসের যুক্ত ভাবে রাষ্ট্রভাষা বাংলা সংগ্রাম পরিষদ গঠন।
" " ফরিদপুর, যশোর হয়ে দৌলতপুর, খুলনা ও বরিশাল সহ জেলায় জেলায় ছাত্রসভায় বক্তব্য প্রদান করেন।
" " ১১ মার্চ বাংলা ভাষা দিবস পালনের দায়ে মিছিলে লাঠিচার্জের শিকার ও দ্বিতীয় বারের মত গ্রেপ্তার হন। পাঁচদিন জেলে থাকেন।
" " ১৫ তারিখ মুক্তি লাভ, ১৬ তারিখ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ ছাত্রসভায় প্রথমবারের মত সভাপতিত্ব করেন।
" " টাংগাইলে দুটো আইনসভার আসন খালী হওয়ায় মুসলীম লীগের বিরুদ্ধে নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য মওলানা ভাসানীর সাথে আলোচনা। মওলানা ভাসানী খাজা নাজিমউদ্দীনের সাথে বোঝাপড়ার মাধ্যমে নির্বাচন করেন। পরে মওলানা ভাসানীর আসন নির্বাচনী হিসেব দাখিল না করার অপরাধে বাতিল হয়।
" " টাংগাইল ও নারায়ন গন্জে মাওলানা ভাসানীর সভাপতিত্বে সভা। শহীদ সোহরাওয়ার্দী সাহেবের ঢাকায় আগমন ও বিভিন্ন জায়গায় সভা।
১৯৪৯ সাল
বিশ্ববিদ্যালয়ে নিন্ম বেতনভোগী কর্মচারীদের আন্দোলনে সংহতি ও সহযোগিতা
**** আন্দোলনে জড়িত থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কৃত
**** পুরোনো লীগ কর্মী ও নেতাদের সাথে আলোচনা। নতুন দল গঠন করা যায় কিনা এ ব্যাপারে। নেতার সংকট। আসাম ফেরত মওলানা ভাসানীর সাথে আলোচনার সিদ্ধান্ত। আসাম ময়মনসিংহ, পাবনা ও রংপুরে তিনি পরিচিত হলেও পূর্ব বাংলার সাধারণ জনগণ তাকে তেমন জানতনা। কারণ তিনি বেশিরভাগ সময় আসামেই কাটিয়েছেন। মুসলীম লীগের নেতা হিসেবে আসামের বাংগাল খেদাও আন্দোলনের বিরুদ্ধে রুখে দাড়িয়েছিলেন। অন্যদিকে সীমান্ত প্রদেশে পীর মানকি শরীফ আওয়ামী মুসলিম লীগ নামে সংগঠন গঠন করেছেন।
*** ছাত্রলীগের কনভেনর নইমউদ্দিন বন্ড দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রত্ব ফেরত। সভার মাধ্যমে তাকে ছাত্রলীগ থেকে বহিস্কার। (সম্ভবত শেখ মুজিব ছাত্রলীগের সভাপতি হন আমি নিশ্চিত নই) শাস্তিমুলক বহিস্কার প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আন্দোলনের ঘোষনা।
*** টাংগাইল উপনির্বাচনে শামসুল হককে প্রার্থী ঘোষনা (নিবার্চনে প্রথমবারের মত মুসলীম লীগের বিরুদ্ধে দাড়িয়ে তিনি জয়লাভ করেন)। একদিকে নির্বাচন অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন। দুদিকেই শেখ মুজিবের ব্যস্ততা।
***** ১৮ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মঘট, বিকালে ভাইস চ্যান্সেলরের বাড়ি ঘেরাও। ১৯ তারিখ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন।
*** নিবার্চিত হয়ে শামসুল হক ঢাকায় আসার পর ২৩ জুন হুমায়ুন সাহেবের রোজ গার্ডেনের বাড়িতে মুসলীম লীগের পুরোন কর্মীরা মিলে সভা করেন। অনেক পুরোন নেতা এবার মাঠে নামেন। যাদের মধ্যে শেরে বাংলা, মওলানা ভাসানী, মওলানা রাগীব আহসান এমএলএ দের মধ্যে খয়রাত হোসেন, আনোয়ারা খাতুন, আলী আহমদ খান, হাবিবুর রহমান যোগ দেন। শেখ মুজিব জেল থেকে খবর পাঠান "মুসলীম লীগের পিছনে ঘুরে লাভ নাই, তারা দলে নিতে চাইলেও আর যাওয়া উচিত হবেনা, ছাত্র রাজনীতি আর করবোনা, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানই করবো, কারণ বিরোধী দল না থাকলে এদেশে একনায়কত্ব চলবে।"
### কর্মী সভায় নতুন রাজনৈতিক প্রতিষ্টান গঠনের সিদ্ধান্ত। নাম: পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ। মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী সভাপতি, শামসুল হক সাধারণ সম্পাদক, শেখ মুজিবুর রহমান যুগ্ম সম্পাদক হন।
### জেল থেকে বের হওয়ার পর গোপাল গঞ্জে হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে জনসভা। সরকারের বাধাঁ। ১৪৪ ধারা জারী, মসজিদ থেকে বঙ্গবন্ধু পুনরায় গ্রেফতার রাতে জামিন। আওয়ামী লীগ গঠিত হওয়ার পর ঢাকার বাইরে এটাই প্রথম জনসভা।
### (আইনের ছাত্র বঙ্গবন্ধু আর আইন পড়বেনা শুনে শুনে শেখ মুজিবের পিতা কষ্ট পান। তিনি বলেন, ঢাকায় না পড়তে চাইলে বিলেত গিয়ে পড়তে। যদি দরকার হয় জমি বিক্রি করে টাকা দিবে। বঙ্গবন্ধু বলেন, এখন বিলেত গিয়ে কি হবে, অর্থ উপার্জন আমি করতে পারবনা" । শেখ মুজিবের জেদ হয়েছিল মুসলিম লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে। যে পাকিস্তানের স্বপ্ন দেখেছিলেন তার উল্ট হয়েছে। এর একটা পরিবর্তন দরকার। পূর্ব পাকিস্তানের জন্য কিছুই নাই। সব পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। শেখ মুজিবের পিতা বললেন, আমাদের জন্য কিছু করতে হবেনা। তুমি বিবাহ করেছ, তোমার মেয়ে হয়েছে তাদের জন্য তো কিছু করা দরকার। বঙ্গবন্ধু বললেন, আপনি তো আমাদের জন্য জমিজমা যথেস্ট করেছেন, যদি কিছু করতে না পারি বাড়ি চলে আসব। তবে অন্যায়কে প্রশ্রয় দেওয়া চলতে পারেনা। (শেখ মুজিবের স্ত্রী নিজে কষ্ট করেও শেখ মুজিবের জন্য সব সময় টাকা জমিয়ে রাখতেন। ইত্তেহাদের সাংবাদিক হিসেবে কিছু টাকা পেতেন। উনার অন্য কোন আয়ের উৎস ছিলনা। )
### ঢাকায় ফিরে ছাত্রলীগের বার্ষিক সম্মেলন করেন। ছাত্রলীগ থেকে অবসর।
### আওয়ামলীগের ওয়ার্কিং কমিটির সভায় ম্যানিফেস্টো ও গঠনতন্ত্র নিয়ে কয়েকদিন ধরে আলোচনা। (শামসুল হক সাহেবের সাথে মাওলানা ভাসানীর তর্ক, শামসুল হক সাহেব মওলানা ভাসানীকে বলেন: এ সমস্ত আপনি বুঝবেন না। কারণ এ সমস্ত জানতে হলে অনেক শিক্ষার প্রয়োজন, তা আপনার নাই। )মাওলানা ভাসানীকে দায়িত্ব দেয়া হয়ে ওয়াকিঙ কমিটির সদস্য মনোনয়ন দেয়ার। তিনি এমন অনেককেই মনোনয়ন দেন যাদের চেনা জানা পর্যন্ত নেই।
### প্রতিষ্ঠানের কাজে আত্মনিয়োগ, জামালপুর মহকুমায় প্রথম সভা। ১৪৪ ধারা জারী। মাওলানা ভাসানী সাহেব বক্তব্য বাদ দিয়ে মোনাজাত শুরু করলেন। মোনাজাতে যা কিছু বলার বলে ফেললেন।### সভায় মাওলানা ভাসানীকে বাদ দিয়ে শামসুল হক সাহেবকে দিয়ে সভাপতিত্ব করানোয় মাওলানা ভাসানী রাগ করলেন। তিনি রাতে ভাত খাবেন না। তাকে নাকি অপমান করা হয়েছে। ( বঙ্গবন্ধু এ ব্যাপারে লিখেছেন: এই দিন আমি বুঝতে পারলাম মাওলানা ভাসানীর উদারতার অভাব। তবুও তাকে আমি ভক্তি শ্রদ্ধা করতাম। কারন তিনি জনগণের জন্য ত্যাগ করতে প্রস্তুত ছিলেন। যেকোন মহৎ কাজ করতে হেল ত্যাগ ও সাধনার প্রয়োজন। যারা ত্যাগ করতে প্রস্তুত নয় তার জীবনে কোন ভাল কাজ করতে পারে নাই।)
### ঢাকায় আরমানিটোলা ময়দানে জনসভায় বক্তব্য প্রদান।
### শামসুল হক সাহেবের সাথে মাওলানা সাহেবের মনমালিন্য শুরু হয় জামালপুরের ঘটনার পর থেকেই। মাওলানা সাহেব সুযোগ পেলেই একে তাকে শামসুল হক সাহেবের বিরুদ্ধে বলতেন। শামসুল হক সাহেবের বিয়ের দিন ঘনিয়ে আসছিল। তিনি বিয়ে নিয়ে ব্যস্ত থাকায় পার্টির সমস্ত দায়িত্ব শেখ মুজিবের কাধেঁ এসে পড়ে।
### ১১ অক্টোবর লিয়াকত আলী খান ঢাকায় আসবেন, শেখ মুজিব মওলানা ভাসানীর নামে সাক্ষাৎ করতে চেয়ে একটি টেলিগ্রাম দেন। টেলিগ্রামের উত্তর দেননি লিয়াকত আলী খান। সাংবাদিকদের বলেন আওয়ামীলীগ কি তিনি জানেন না। ### ১১ অক্টোবর আরমানীটোলায় বিরাট সভা আহ্বান করা হয়। শেষ বক্তা হিসেবে বঙ্গবন্ধু বক্তৃতা করেন। উনার আহ্বানে লিয়াকত আলী খানের উদ্দেশ্য মিছিল বের করা হয়। মিছিলে পুলিশ লাটিচার্জ ও টিয়ার গ্যাস ছাড়ে। শেখ মুজিব আহত হয়ে নদর্মায় পড়ে থাকেন। পড়ে উনাকে বেহুশ অবস্থায় মোগলটুলি অফিসে নিয়ে আসা হয়। সেখানে পুলিশ রাতে ঘেরাও করলে পালানোর জন্য আহত অবস্থায় তিনতলা থেকে দোতলায় লাফ দেন। কয়েকদিন এদিক সেদিক লুকিয়ে থাকেন। পরে ভাসানী সাহেব উনাকে পাকিস্তান যেতে বলেন সোহরাওয়ার্দী ও মিয় ইফতিখার উদ্দীনের সাথে দেখা করার জন্য। উদ্দেশ্য নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগ গঠন। শেখ মুজিব পাকিস্তান যান। সেখানে সোহরাওয়ার্দীর সাথে দেখা করেন। বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় বিবৃতি দেন। আওয়ামীলীগের কথা পত্র পত্রিকায় ছাপানো হয়।
##### পাকিস্তানে একমাস থেকে, দিল্লী হয়ে দেশে ফিরে আসেন। কলকাতায় ও গোপালগঞ্জে পুলিশের চোখ এড়িয়ে বাড়ি আসেন। (গ্রেফতারী পরোয়ান ঝুলছিল) । পরে বরিশাল নারায়নগঞ্জ হয়ে ঢাকায় আসেন। শওকত আলীর নিকট খবর পান মাওলানা সাহেব যাদের কার্যকরী কমিটির সদস্য করেছিলেন তাদের মধ্যে থেকে বার তেরজন ভয়ে পদত্যাগ করেছেন। অনেক পুরোন যারা ছিলেন তারা বিবৃতি দিয়ে পদত্যাগ করেছেন। শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক ও এডভোকেট জেনারেলের চাকরী নিয়ে আওয়ামীলীগ থেকে পদত্যাগ করেন। এসময় কয়েকজন ছাড়া আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে আর তেমন কেউ রইলনা। বঙ্গবন্ধু আবদুল হামিদ চৌধুরীর বাড়িতে উঠেন। কয়েকদিন পর সেখান থেকে আবার গ্রেফতার হন। তখন ১৯৪৯ এর ডিসেম্বর। জেলে ভাসানী, শামসুল হক, শেখ মুজিব একই সেলে ছিলেন। আওয়ামী লীগের মেরুদন্ড গুড়িয়ে দিতে উঠে পড়ে লাগে সরকার।
#### ১৯৫০ সালের শেষের দিকে মাওলানা ভাসানী ও শামসুল হক মুক্তি পান। শেখ মুজিবকে গোপালগঞ্জ কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
১৯৫১ সালের শেষ দিকে আবার ঢাকা জেলে নিয়ে আসা হয়। অসুস্থ থাকায় জেল কর্তৃপক্ষ শেখ মুজিবকে হাসপাতালে রাখেন।(শহীদ সাহেব পুর্ব বাংলায় এসে ভাসানীর সাথে মিলে বিভিন্ন জায়গায় সভা করেন। বঙ্গবন্ধুর মুক্তির জন্যও দাবী জানান।)
###লিয়াকত আলীর মৃত্যুর পর খাজা নাজিমউদ্দীন প্রধানমন্ত্রী হন এবং ১৯৫২ সালে তিনি পল্টনের এক জনসভায় উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার ঘোষনা দেন। ছাত্রলীগ নেতারা শেখ মুজিবের সাথে গোপনে হাসপাতালে দেখা করেন। বঙ্গবন্ধু তাদের সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ গঠন করতে বলেন।
###১৬ ফেব্রুয়ারী থেকে শেখ মুজিব ও মুক্তির দাবীতে অনশন করার ঘোষনা দেন। ১৫ ফেব্রুয়ারী শেখ মুজিবকে ফরিদপুর জেলে পাঠিয়ে দেয়া হয়। ১৬ তারিখ থেকে অনশন শুরু করেন। খাওয়া দাওয়া সর্ম্পুন বন্ধ করে দেন। চার দিন পর জেল কর্তৃপক্ষ নাকে নল দিয়ে খাওয়াতে শুরু করে। ২৫ তারিখ ডাক্তার এসে পরীক্ষা করে মৃত্যুপথযাত্রী শেখ মুজিবকে দেখে মুখ কালো করে ফেলেন। ২৭ তারিখ শেখ মুজিবের মুক্তির আদেশ আসে। একটানা প্রায় আড়াই বছর জেলে কাটিয়ে তিনি মুক্তি লাভ করেন।
###এক মাস বাড়িতে কাটিয়ে ঢাকায় আসেন। আওয়ামীলীগের কার্যকরী কমিটির সভায় শেখ মুজিবকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়। মাওলানা ভাসানী ও শামসুল হক তখন জেলে ছিলেন। বাংলা ভাষা দাবী ও রাজবন্দীদের মুক্তির দাবী জানিয়ে প্রেস কনফারেন্স।
### পাকিস্তানে গিয়ে খাজা নাজিমুদ্দিনের সাথে সাক্ষাৎ। জেল বন্দিদের মুক্তি দাবী।
###পাকিস্তানে প্রেস কনফারেন্স করেন, সেখানে বলেন ত্রিশটা আসনে উপনির্বাচনে বন্ধ রয়েছে। যেকোন একটায় নির্বাচন দিতে বলূন। আমরা মুসলীম লীগ প্রার্থীকে শোচনীয় ভাবে পরাজিত করতে সক্ষম।
### শহীদ সাহেবের সাথে দেখা করেন এবঙ সেখানে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের এফিলিয়েশন নেয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়।
### লাহোর থেকে ঢাকায়। ওয়ার্কিঙ কমিটির সভা আহ্বান। মাওলানা সাহেব অসুস্থ অবস্থায় জেলে। শেখ মুজিব জেলায় জেলায় সভা ও সংগঠন দৃড় করার কাজে নেমে পড়লেন।
## ২৪ সেপ্টেম্বর পিকিং এ শান্তি সম্মেলনে যাত্রা। দীর্ঘ চীন সফর শেষে ঢাকায় প্রত্যাবর্তন। মাওলানা সাহেব তখনও জেলে। পল্টন ময়দানে বিরাট জনসভায় বক্তব্য প্রদান।
#১৯৫৩ সালে শামসুল হক মুক্তি পেলেন। তিনি কিছুটা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছিলেন। শেখ মুজিব তখন একাই কাজ চালিয়ে যেতে লাগলেন। জেলা উপজেলা ছাড়াও দেশের শতকরা সত্তর ভাগ ইউনিয়ন কমিটিও গঠিত হয়ে গেল। এরই মধ্যে মাওলানা ভাসানীও ছাড়া পেয়েছেন। এরপর আওয়ামীলীগের কাউন্সিল সভার আয়োজন শুরু হল।
## কাউন্সিলে মাওলানা ভাসানী সভাপতি, শেখ মুজিব সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
১৯৫৩ সালের মাঝামাঝিতে সাধারণ নির্বাচন ঘোষনা।
## শেরে বাংলা পুনরায় মুসলীম লীগে যোগ দেন।
### আওয়ামীলীগের একট গ্রুপ হক সাহেবের সাথে যুক্তফ্রন্ট করতে আগ্রহী হয়। ভাসানী বলেন হক সাহেব যদি আওয়ামীলীগে আসে তো আসতে পারেন। তবে তার সাথে কিছুতেই যুক্তফ্রন্ট করা চলবেনা। কারণ মুসলিম লীগ থেকে বিতাড়িতরাই তার সাথে তখন যোগ দিয়েছিল।
## ওয়ার্কিং কমিটির সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হয়। বেশির ভাগ সদস্যই যুক্তফ্রন্টের বিরুদ্ধে মত দেন। হক সাহেব আওয়ামীলীগে যোগ দিতে চেয়েছিলেন কিন্তু তার সংগীরা তাকে ভুল বোঝায়।
##ময়মনসিংহে আওয়মীলীগের ওয়ার্কিঙ কমিটির সভা হয়। শেখ মুজিব সহ বেশির ভাগ সদস্যই যুক্তফ্রন্টের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। শেখ মুজিব বলেন দেশে আওয়ামীলীগ ছাড়া আর কোন দল নেই। যুক্তফ্রন্ট করা মানে কিছু মরা লোককে বাচিয়ে রাখা। শহীদ সাহেব ও ভাসানী সাহেব ও যুক্তফ্রন্টের ঘোর বিরোধী ছিলেন। যুক্ত ফ্রন্ট হবেনা এ সিদ্ধান্তের পর শহীদ সাহেব পাকিস্তান গেলেন । শেখ মুজিব জেলায় জেলায় সভা করে বেড়াচ্ছেন। আর এদিকে ঢাকায় বসে মাওলানা ভাসানী শেরেবাংলার সাথে যুক্তফ্রন্ট সই করে ফেললেন। (যেখানে আওয়ামীলীগ একক ভাবে জিততে পারত সেখানে নেজামে ইসলাম পাির্ট, কৃষক শ্রমিক পার্টি, গনতান্ত্রিক দল সহ বিভিন্ন নামের সংগঠন যুক্তফ্রন্টের নামে নমিনেশন দাবীকরতে লাগল। যারা দিনরাত খেটেছে আওয়ামীলীগের জন্য এমন লোক নমিনেশন পেলনা, মাত্র তিন চার মাস আগেও মুসলীম লীগে ছিল এরকম লোক নমিনেশন পেয়ে গেল।) সব মিলিয়ে ভজগট লেগে গেল।
### নিবার্চনে গোপালগঞ্জ থেকে শেখ মুজিব নির্বাচিত হন। তিনশ আসনের মধ্যে নয়টি পায় মুসলিম লীগ।
## আওয়ামীলীগের নেতা হিসেবে শহীদ সাহেব নির্বাচন পরিচালনা করলেও নির্বাচনের পর পার্লামেন্টারী বোর্ডের নেতা হন শেরে বাংলা। এর পর মন্ত্রী সভা গঠন নিয়ে আলোচনা চলল। হক সাহেব কয়েকজন নিয়ে প্রাথমিক মন্ত্রী সভা গড়তে চাইলেন। কিন্তু পুরো মন্ত্রীসভা গঠন না হলে আওয়ামীলীগের কেউ মন্ত্রীসভায় না যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। হক সাহেব বঙ্গবন্ধুকে মন্ত্রীসভায় নিতে অস্বীকৃতি জানান। মন্ত্রীসভা নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র চলল। পরে শেখ মুজিব সহ বার জনকে নিয়ে মন্ত্রীসভা গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। পরে রাতারাতি আরও কয়েকজন বেড়ে যায়।
### সরকার গঠনের পর শুরু হয় নতুন ষড়যন্ত্র। আদমজী জুট মিলে দাংগা সৃষিট করা হয় সরকারের বদনামের জন্য। যুক্তফ্রন্ট সরকারকে হেয়প্রতিপন্ন ও অক্ষম প্রমাণের জন্য।পশ্চিম পাকিস্থানে এ নিয়ে প্রপাগান্ডা চালানো হল। আর এর পরিণতি হিসেবে মন্ত্রীসভা ভেংগে দেয়া হয়। শেখ মুজিব করাচি যান অসুস্থা শহীদ সাহেবকে দেখতে সেখান থেকে দেশে ফিরে দাংগা সৃষ্টির অভিযোগে গ্রেফতার হন। মাওলানা ভাসানী এসময় বিলাত যান। ১২ জন মন্ত্রীর মধ্যে একমাত্র শেখ মুজিবই গ্রেফতার হন। দশমাস জেলে থাকতে হয় আবারও।
#### এদিকে ৫৩ সালে মুসলীম লীগ বিতাড়িত কেউ কেউ মন্ত্রীত্ব ফিরে পেতে লবিং চালিয়ে যাচ্ছিলেন। মোহাম্মদ আলী ঢাকায় এসে হক সাহেবের দলের সাথে গোপন সমঝোতা করলেন আওয়ামীলীগকে না নিলে তার দল পূর্ব বাংলায় সরকার গঠন করতে পারবে এবং শহীদ সাহেব যুক্তফ্রন্টের কেউ নয় একথা ঘোষনা দিতে হবে। শহীদ সাহেব রোগমুক্তির পর কারও সাথে পরামর্শ না করে দেশের অবস্থা না বুঝে আইনমন্ত্রীর পথ গ্রহন করলেন।
## ১৯৫৫ ৫ জুন গনপরিষদের সদস্য হন। ১৭ জুন আওয়ামীলীগের পক্ষে পূর্ব পাকিস্থানের স্বায়ত্বশাসন দাবী করে ২১ দফা ঘোষনা দেন। ২১ অক্টোবর কাউন্সিলে দলের নাম থেকে মুসলিম শব্দটি বাদ দেয়া হয়। বঙ্গবন্ধু পুনরায় সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
১৯৫৬ সালে কোয়ালিশন সরকারের মন্ত্রী হন।
১৯৫৭ সালে দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন।
১৯৫৮ সালে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ও সেনাপ্রধান সামরিক শাসন জারি করে রাজনীতি নিষিদ্ধ করেন। ১১ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার হন। ১৪ মাস জেল খাটার পর তাকে মুক্তি দিয়ে পুনরায় জেলগেটে গ্রেফতার করা হয়।
১৯৬০ সালের ৭ ডিসেম্বর হাইকোর্টে রিট করে তিনি মুক্তিলাভ করেন। আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন করার জন্য তিনি গোপন রাজনৈতিক কর্মকান্ড চালান। এ সময়ই স্বাধীনতা সংগ্রামের লক্ষ্য স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ নামে গোপন সংগঠন গড়ে তোলেন।
১৯৬২ সালের ৬ ফ্রেব্রুয়ারী জননিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার করা হয়। ১৮ জুন মুক্তিলাভ করেন। (২জুন সামরিক শাষনের অবসান ঘটে)। ২৪ সেপ্টেম্বর লাহোর যান এবং সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট গড়ে তোলেন।
১৯৬৩ সালে অসুস্থ সোহরাওয়াদীর্র সাথে পরামশের জন্য লন্ডন যান শেখ মুজিব। ৫ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী ইন্তেকাল করেন।
১৯৬৪ সালের ২৫ জানুয়ারী বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে আওয়ামীলীগকে পুনরুজ্জীবিত করা হয়।
১১ মার্চ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ ও সাম্প্রদায়িক দাংগা প্রতিরোধে দাংগা প্রতিরোধ কমিটি গঠিত হয়।
রাস্ট্রপতি নির্বাচনের ১৪ দিন পূর্বে আবার গ্রেফতার।
১৯৬৫ সালে মুক্তিলাভ।
১৯৬৬ সালে ৫ ফেব্রুয়ারী ৬ দফা পেশ। ১ মার্চ বঙ্গবন্ধু আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি বিভিন্ন জেলায় রাজনৈতিক সফর শুরু করেন । তাকে বারবার গ্রেফতার করা হয়। ৮ মে পুনরায় গ্রেফতার হন।
১৯৬৮ সালের ৩ জানুয়ারী রাষ্ট্রদ্রোহী হিসেবে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের। ১৭ জানুয়ারী মুিক্ত দিয়ে জেল গেট থেকে পুনরায় গ্রেপ্তার।
১৯৬৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারী জনগণের চাপের মুখে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহর বঙ্গবন্ধুর মুক্তি। ২৩ ফেব্রুয়ারী রেসকোর্ষ ময়দানে বঙ্গবন্ধুকে সংবর্ধনা। আনুষ্টানিক ভাবে বঙ্গবন্ধু উপাধি প্রদান।
১৯৭০ সালের ৬ জানুয়ারী পুনরায় আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্বাচিত। ১ এপ্রিল কার্যকরী পরিষদের সভায় নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত। ৭ জুন রেসকোর্স ময়দানের সভায় ছয়দফার প্রশ্নে আওয়ামীলীগকে নির্বাচিত করার জন্য জনসাধারণের প্রতি আহ্বান। ১৭ অক্টোবর দলের প্রতিক নৌকা নির্বাচন। ২৮ অক্টোবর জাতির উদ্দেশ্য বেতার টিভিতে ভাষন। ৭ ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নিরংকুশ বিজয় লাভ। জাতীয় পরিষদের ১৬৯ টি আসনের মধ্য ১৬৭ টি প্রাদেশিক পরিষদের ৩০০ আসনের মধ্যে ২৮৮ টি আসন লাভ।
১৯৭১ সালের ৩ জানুয়ারী নির্বাচিতদের শপথ গ্রহণ। ৫ জানুয়ারী পাকিস্তানের সর্বাধিক আসন লাভকারী ভুট্টো কেন্দ্রে আওয়ামীলীগের সাথে কোয়ালিশন সরকার গঠনে সম্মতি। জাতীয় পরিষদের সদস্যদের সভায় শেখ মুজিব পার্লামেন্টারী দলের নেতা নির্বাচিত হন। ২৮ জানুয়ারী ভুট্টো ঢাকায় আসেন। তিনদিন বৈঠকের পর আলোচনা ভেংগে যায়। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ঢাকায় জাতীয় পরিষদের সভা আহ্বান করেন। ১৫ ফেব্রূয়ারী ভুট্টো দুই প্রদেশে দুই দলের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবী জানান।
১৬ ফেব্রুয়ারীী বঙ্গবন্ধু এক বিবৃতিতে এ দাবীর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন ক্ষমতা আওয়ামীলীগের কাছেই হস্তান্তর করতে হবে।
১ মার্চ জাতীয় পরিষদের সভা অনিদির্ষ্ট কালের জন্য বনধ ঘোষনা। ৩ মার্চ দেশব্যাপী হরতাল আহ্বান। ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে স্বাধীনতার সংগ্রামের ডাক।
৭ মার্চ থেকে ২৫ মার্চ স্বাধীন দেশ হিসেবেই বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্র পরিচালনা করেন। বাইরের কারো হুকুম এদেশে চলেনি। সবাই বঙ্গবন্ধুর নিদের্শ মেনে নিয়েছে। ১৬ মার্চ ক্ষমতা হস্তান্তর আলোচনা শুরু হয় বঙ্গবন্ধু আর ইয়াহিয়ার মাঝে। ভুট্টৌ এসে আলোচনায় যোগ দেন। ২৪ মার্চ পর্যন্ত আলোচনা হয়।২৫ মার্চ আলোচনা ব্যর্থ হলে ইয়াহিয়ার ঢাকা ত্যাগ। রাতে নিরীহ জনগণের উপর পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর নৃশংষ হত্যাযজ্ঞ। ২৫ রাত ‌১২টা ১০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষনা দেন। এই ঘোষনা সর্বত্র টেলিফোন, টেলিগ্রাম ওয়ারল্যাসে পাঠানো হয়। রাত ১.৩০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার হন। ২৬ মার্চ ইয়াহিয়া এক ভাষনে আওয়ামীলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষনা করে বঙ্গবন্ধুকে দেশদ্রোহী আখ্যা দেন।
২৬ মার্চ চট্টগ্রাম স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে এম এ হান্নান বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষনা পত্র পাঠ করেন।
১০ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি করে বিপ্লবী সরকার গঠন করা হয়। ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনী আত্মসমর্পন করে। তার আগে ৭ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধুকে মৃত্যুদন্ড প্রদান করা হয়।
১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারী আন্তর্জাতিক চাপের মুখে বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দেয়া হয়। বঙ্গবন্ধুকে ঢাকার উদ্দেশ্য প্রথমে লন্ডন পাঠানো হয় সেখানে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ। লন্ডন থেকে ঢাকায় আসার পথে ভারতে যাত্রা বিরতি সেখানে ইন্দিরা গান্ধীর সাথে সাক্ষাৎ। ১০ জানুয়ারী ঢাকায় পৌছার পর অবিস্মরনীয় সম্বর্ধনা জ্ঞাপন। ১২ জানুয়ারী প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৪৯ সালে দেয়া বাহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার করে। ৬ ফেব্রুয়ারী ভারত সফর। ২৮ ফেব্রুয়ারী সোভিয়েত ইউনিয়ন সফর। ১২ মার্চ মিত্রবাহিনীর বাংলাদেশ ত্যাগ। ১০ অক্টোবর জুলিও কুরী পুরস্কার লাভ।১৫ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের খেতাব প্রদানের ঘোষনা। ১৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশের সংবিধানে স্বাক্ষর। ১৬ ডিসেম্বর সংবিধান কার্যকর।
১৯৭৩ সালে জাতীয় সংসদের প্রথম নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৩ টি আসন লাভ। ৩ সেপ্টেম্বর ঐক্যফ্রন্ট গঠন। ৬ সেপ্টেম্বর আলজিরিয়া, ১৭ অক্টোবর জাপান সফর।
১৯৭৪ সালে ১৭সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বাংলায় ভাষন প্রদান।
১৯৭৫ সালে ২৫ জানুয়ারী রাষ্ট্রপতি পদ্ধতির সরকার ব্যবস্থার প্রবর্তন।২৪ ফেব্রুয়ারী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে জাতীয় দল বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামীলীগ গঠন। জাতীয় দলে যোগদানের জন্য সকল রাজনৈতিক দল ও নেতার প্রতি আহ্বান।
১৫ আগষ্ট কুচক্রী সেনাসদস্যদের হাতে সপরিবারে নির্মমভাবে শহীদ হন। সামরিক শাষন জারি। জাতির জনকের আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিচারের হাত থেকে রেহাই দেয়ার জন্য ২৬ সেপ্টেম্বর কুখ্যাত কালো আইন ইনডেমনিটি (সামরিক অধ্যাদেশ) জারী। জেনারেল জিয়াউর রহমান সামরিক শাষনের মাধ্যমে অবৈধ ভাবে ক্ষমতা দখল। খুনিদের বিদেশের বিভিন্ন দুতাবাসে চাকরী প্রদান।